ধম্মপদ
যমক বগ
মনোপুঝাংগমা ধম্মা মনোসেট্ঠা মনোময়া, মনসা চে পঙ্গুঠেন ভাসতি বা করোতি বা,
ততো নং দুগ্ধমম্মোতি চক্কং'ব বহুতো পদং।
মনোপুংগমা ধম্মা মনোসেট্ঠা মনোমযা, মনসা চে পসন্নেন ভাসতি বা করোতি বা, ততো নং সুখমন্বেতি ছাযা'ৰ অনপাধিনী।
'অকোচ্ছি মং, অবধি মং, অজিনি মং, অহাসি মে
যে চ তং উপনয্হন্তি, বেরং তেসং ন সম্মতি।
'অককোচ্ছি মং, অবধি মং, অজিনি মং অহাসি মে
যে চ তং ন উপনয্হন্তি বেরং ভেসুপসম্মতি।
নহি বেরেন বেরানি সম্মন্তী'ধ কুদাচন,
অবেরেন চ সম্মতি এস ধম্মো সনস্তনো।
সুভানুপসৃসিং বিহরন্তং ইন্দ্রিযেসু অসংবৃতং, ভোজনমূহি চ অমতঞজ্ঞ কুসীতং হীনবীরিযং ।
তং বে পসহতি মারো বার্তো রুখং'ব দুব্বলং।
অসুভানুপসৃসিং বিহরস্তং, ইন্দ্রযেসু সুসংবৃতং,
ভোজনমূহি চ মত্তঞং, সম্বং, আর বরং, তং বে নঙ্গসহতি মারো বাতো সেলং'ব পতং ।
যথাগারং দুচ্ছনং, বুঠি সমতিবিজঝাতি, এবং অভাবিতং চিত্তং রাগো সমতিবিজ্ঝতি।
যথাগারং সুচ্ছনং বুঠি ন সমতিবিজঋতি
এবং সুভাবিতং চিত্তং রাগো ন সমতিবিজ্ঝতি।
ইধ নন্দতি, পেচ্চ নন্দতি, কতপুঞঞো উভযথ নন্দতি; পুঞঞং মে কতস্তি নন্দতি, ভিয্যো নন্দতি সুগৃগতিং গতো।
শব্দার্থ
পদুঠেন- প্ৰদুষ্টভাবে; চক্কং- ঢাকা; দুগ্ধমশ্বেতি- দুঃখ অনুসরণ করে, পসন্নেন প্রসন্নভাবে; অকোচ্ছি - আক্রোশ, অহাসি- চুরি করল; উপনয্হস্তি - মনে পোষণ করা; সম্মতি প্রমাণিত হওয়া; বেরেন বেরানি-বৈরী দ্বারা বৈরী, অসংবৃতং অসংযত, পসহতি পরাভূত করে, দুচছনং ভালভাবে আচ্ছাদিত নয়; সুচ্ছনং ভালভাবে আচ্ছাদিত; সমতিবিস্তৃতি - প্রবেশ করে; অভাবিতং চিত্তং- ভাবনাহীন চিত্ত; সুভাবিতং চিত্তং-সুনিবিষ্ট চিত্ত।সারমর্ম
মানুষের সুখ-দুঃখের প্রকৃত কারণ হচ্ছে মন। মানুষ যে সমস্ত জিনিস দেখে তা মনের দরজা দিয়েই ভিতরে প্রবেশ করে। মনই মানুষের জীবনকে গড়ে তোলে এবং তাকে সুখী ও দুঃখী করে। দূষিত মনে কাজ করলে দুঃখ এবং প্রসন্ন মনে কাজ করলে সুখ লাভ করা যায়। আগুন যেমন ইচ্ছন না পেলে জ্বলতে পারে না, সেরূপ কেউ আমাকে আক্রোশ করল, আমাকে পরাস্ত করল, আমাকে ছিনিয়ে নিল এরূপ চিন্তা মনে স্থান না দিলে বৈরীভাব দূর হয়ে যায়। জগতে শত্রুতার দ্বারা শত্রুতাকে জয় করা যায় না। মৈত্রী দ্বারাই শত্রুতাকে জয় করতে হয়। ভোগের ইন্দ্রিয়গুলো সাধনার পথে বড় বাধা। একে জয় করার জন্য চাই মনে দৃঢ়তা, সংযম, অতুলনীয় বীর্য, পরিপূর্ণ শুদ্ধা আর কঠোর সংকল্প। বৃষ্টির জল থেকে গৃহকে রক্ষার জন্য যেমন-সু-আচ্ছাদিত গৃহ প্রয়োজন তেমনি অপশক্তি থেকে রক্ষার জন্য ভাবনাযুক্ত চিত্তের প্রয়োজন। সৎকর্ম, সৎচিন্তা মানুষকে ইহলোকে ও পরলোকে আনন্দ দেয়।
টীকা
যমক: যমক শব্দের অর্থ জোড়া। কিন্তু এখানে দুটি ভিন্নমুখী ভাব প্রকাশিত হয়েছে বলে এর নাম যমক বা যমজ। যমক বর্গের গাথাগুলোতে এর পরিচয় বিদ্যমান। এখানে দুটি পরস্পর ভিন্নমুখী ভাব প্রকাশিত হয়েছে। এ দুটির মধ্যে একটির গতি উর্ধ্বমুখী, অন্যটির গতি নিম্নমুখী। প্রদুষ্ট মনে কাজ করলে দুঃখ আসে। প্রসন্ন মনে কাজ করলে সুখ আসে।
অপমান বগ
اد অপমানো অমতপদং, পমাদো মঙ্গুনো পদং,
অপূপমত্তা ন মীযস্তি, যে পমত্তা যথামতা। এতং বিসেতো এতো অপমানমূহি পণ্ডিতা,
অপূপমাদে পমোদপ্তি অরিযানং গোচরে রতা। তে ঝাখিনো সাততিকা নিচ্চং দগৃহপরমা,
ফুসন্তি ধীরা নিব্বানং যোগকৃমেং অনুত্তরং।
উঠনবতো সতিমতো সুচিকম্মসূস নিসম্মকারিনো, সঞতস চ ধৰ্ম্মজীবিনো অপমত্তস্স যসো "ভিবতি।
উঠানেন'পূপমাদেন সঞঞমেন দমেন চ
দীপং কযিরাথ মেধাবী যং ওঘো নাভিকীরতি।
পমাসমনুষঞজন্তি বালা দুম্মেধিনো জনা, অপমানঞ্চ মেধাবী ধনং সেট্ঠং'ব ৱক্ষতি।
মা পমাদমনু্যু জত্তি মা কামরভিসন্ধবং, অপূপমত্তো হি ঝাযস্তো পপপোতি বিপুলং সুখং।৮। অপপমত্তো পযত্তেসু সুত্তেসু বহুজাগরো,
অবলস্সং'ব সীঘসো হিতা যাতি সুমেধসো।
অপমাদরতো ভিক্ষু পমানে ভয়দসূসি বা,
সঞয়োজনং অণুং খুলং ডহং অগগী"ৰ গচ্ছতি।
অপমাদরতো ভিখু পমাদে ভয়দসি বা,
অভব্বো পরহাণায় নিব্বানসের সস্তিকে।
শব্দার্থ
অমতপদং - অমৃতের পদ; মচ্ছনো পদং- মৃত্যুর পথ; মীযস্তি - মরে; গোচরে আচরিত ধর্মে, রতা - রত; - সাততিকা -সতত উদ্যোগী, দলহ পরাক্রমা- দৃঢ় পরাক্রমশালী, উঠানবতো উত্থানশীল; সতিমতো স্মৃতিমান নিসম্মকারিনো- সাবধানী; সঞঞস সংযমীর, যসোবতি যশ বর্ধিত হয়, ঘো জলপ্রবাহ, এখানে সংসার স্রোত, দুম্বোধনো- দুর্বুদ্ধিসম্পন্ন, কামরভিসন্ধবং- কামরতিসম্ভোগ; অবলসো - দুর্বল অশ্ব, সীঘসো দ্রুতগামী অশ্ব; অণু-সুক্ষ; থুল-স্থূল। ডহং-দগ
সারমর্ম
অপ্রমাদ হল কাজে সতর্কতা; জেনে শুনে কাজ করা। সমস্ত সৎ ও পুণ্যকাজের মূলে আছে অপ্রমাদ। প্রমাদ হল তার বিপরীত। যারা প্রমত্ত তারা বেঁচে থেকেও মৃত। অপ্রমাদ অমৃতের পথ; প্রমাদ মৃত্যুর পথ। যিনি অপ্রমত্ত, ধ্যানশীল, উদ্যোগী, দৃঢ়পরাক্রমশীল তিনিই নির্বাণ লাভ করেন। অপ্রমত্ত ব্যক্তি উৎসাহশীল, সভত স্মৃতিমান, ধর্মপরায়ণ, সংযতন্দ্রিয় ও উদ্যমী। তাঁর যশ ক্রমশ বর্ধিত হয়। মানুষের জীবন বিরাট কর্মক্ষেত্র। সংসার সমুদ্র তরংগ কাষ্ঠখণ্ডের ন্যায় ভেসে বেড়াচ্ছে। কিন্তু এরই মাঝে যে মানুষ বীর্য, সংযম ও প্রজ্ঞা দ্বারা আশ্রয় রচনা করে তাকে কোন পাবন ধ্বংস করতে পারে না। অবিবেচক ও দুর্নীতিসম্পন্ন মানুষেরা প্রমত্ত হয়। যারা বিবেচক ও বুদ্ধিমান তাঁরা অপ্রমাদকে শ্রেষ্ঠ ধনের ন্যায় রক্ষা করেন। যাঁরা অপ্রমত্ত, কামাসক্ত নয় তাঁরা . বিপুল সুখের অধিকারী হন। জাগ্রত ব্যক্তি নিদ্রিতের মধ্যে জাগ্রত থেকে বেগমান ঘোড়া যেমন দুর্বল ঘোড়াকে অতিক্রম করে যায় তেমনি সঠিক পথে এগিয়ে যায়। যে ভিক্ষু অপ্রমত্ত, দৃঢ় সংকল্প পরায়ণ, উদ্যমশীল, ভয়দর্শী তিনি সহজে তাঁর লক্ষে পৌঁছতে পারে। অতএব, অপ্রমত্ত হয়ে সংজীবন যাপন করবে। সৎকর্ম কর, আলস্য পরিত্যাগ কর; উদ্যমশীল ও বীর্যবান হও।
অনুপমাদ : অপমান বা অপ্রমাদ শব্দের অর্থ হল অপ্রমত্ততা। অপ্রমাদ হল সৎকাজে উৎসাহ ও উদ্যম। বাংলা ভাষায় এ শব্দের যথাযথ অর্থ নেই। ফাউসবল, চাইল্ডারস, ম্যাক্সমূলার প্রভৃতি পণ্ডিতগণ এর বিভিন্ন অর্থ করেছেন অনেকের মতে অপ্রমাদের নিকটতম অর্থ হল উদ্যামশীলতা। অতএব, অপ্রমাদ শব্দের অর্থ হিসেবে আমরা জাগ্রতভাব, উত্থানশীলতা, উদ্যম ও উৎসাহকে ধরে নিতে পারি। যিনি সংযত, বীর্যবান, শীলবান, স্মৃতিবান ও দৃঢ়প্রতিজ্ঞ তিনিই অপ্রমত্ত। বৌদ্ধ দর্শনের মূল ভিত্তি অপ্রমাদের মধ্যে নিহিত।চিত্ত বগ
१७
اد ফন্দনং চপলং চিন্তং দুরকৃখং দুল্লিবারযং, উজুং করোতি মেধাবী উসুকারো'র তেজনং।
বারিজো'র থলে খিত্তা ওকমোতো উভতো,
পরিকল্পতি দং চিত্তং মারধেয্যং পহাতবে।
দুন্নিগগহস লহুনো যথ কামনিপাতিনো,
চিত্তস দমথো সাধু চিত্তং দত্তং সুখাবহং।
81 সুদুদ্দসং সুনিপুণং যথ কামতিপাতিন, চিত্তং রখেয্য মেধাবী চিত্তং গুত্তং সুখাবহং।
দুরংগমং একচরং অসরীরং গুহাসমূহ,
যে চিত্তং সঞঞমেস্সত্তি মোক্খস্তি মারবন্ধনা।
৬। অনবঠিতচিত্তস সম্বং অবিজানতো, পরিপবপসাদস পঞঞা ন পরিপূরতি।
१ অনবসূতচিত্তস অনযাহত চেতসো, পুঞহপাপহীনস নথি জাগরতো ভয়।
কুপমং কার্যমিমং বিদিত্বা নগরূপমং চিত্তমিদং ঠপেড়া,
যোধেথ মারং পঞঞাযুধেন
জিতঞ্চ রখে অনিবেসনো সিয়া।
দিসো দিসং যং তং কষিরা বেরী পন বেরিনং, মিচ্ছাপণিহিতং চিত্তং পাপিযো নং ততো করে। ১০। নং তং মাতা পিতা কবিরা অঞ্জে বাপি জ্ঞাতকা,
সম্মাপণিতিং চিত্তং সেয্যসো নং ততো করে।
শব্দার্থ
ফন্দনং- স্পন্দনশীল; দুরক্ষং দুরক্ষ্য, উসুকারো শরনির্মাতা, তেজনং - শক্তি, উজুং-সোজা, ওমোতো উভতো জলাশয় থেকে উদ্ধৃত থলে খিত্তা বলে নিক্ষিপ্ত: বারিজো'র মাঝের ন্যায়; মারধেযাং- - মাররাজ্য; পহাতবে পরিত্যাগ করতে; দুন্নিগগহ- দুনিগ্রহ, নতুনো লঘু সুদুদ্দসং- দূর্ধর্ষ গুত্তং গুপ্ত; সুরংগমং - দূরগামী; মোক্খস্তি - মুক্ত হয়; সুঞঞামে সস্তি - শংকা করেন, অনবঠিত চিত্তস - অনবস্থিত চিত্ত; অনবসূত চিত্ত - বাসনাহীন চিত্ত; অনন্নাহত চেতসো - অবিচলিত চিত্ত; কুপমং- কুষ্ণাকারের ন্যায়; পঞঞায়ুধের প্রজ্ঞারূপ অব্রদ্বারা; কবিরা করে; মিচ্ছাপণিহিতং চিত্তং মিথ্যায় পরিচালিত চিত্ত; সম্মাণিহিতং চিত্তং সত্যে পরিচালিত চিত্ত।সারমর্ম
চিত্ত চঞ্চল, দুর্নিবার, দুরক্ষণীয় এবং স্পন্দনশীল। তাকে সংযত করা কঠিন। কিন্তু যিনি জ্ঞানী তিনি চিত্তকে দৃঢ় ও সংযত করেন যেমন তীর নির্মাতা তীরের ফলাকে সোজা করে। জলের মাছকে ডাঙ্গায় তুললে সে যেমন ছটফট করে তেমন ষড়রিপুর বন্ধন থেকে মুক্তির জন্য মানুষের চিত্ত অস্থির হয়। সংযত চিত্তই সুখের কারণ। সদাচারী চিত্তই মানুষকে সুখ দেয়। চিত্ত বিচরণশীল, দূরগামী, অশরীরী ও মনের গুহায় তার নিবাস। একটি বিষয়েই আশ্রয়শীল। বিপথগামী চিত্ত মানুষের প্রভূত ক্ষতি করে যা মাতাপিতা, জ্ঞাতিগোত্র এবং শত্রুরাও করতে পারে না। চিত্তকে সংযত রাখতে হবে, সঠিক পথে পরিচালিত করতে হবে।
পুপু বগ
১। কো ইমং পঠবিং বিজেসতি যমলোকঞ্চ ইমং সদেবকং?
২। কো ধম্মপদং সুদেসিত কুসলো পুপ্ফমিৰ পচেসতি? দেখো পঠবিং বিজেসতি যমলোকঞ্চ ইমং সদেবকং,
৩। দেখো ধম্মপদং সুদেসিতং কুসলো পুপক্ষমিব পচেসতি।
৪। ফেলুপমং কাযমিমং বিদিতা মরীচিষম্ম, অভিসম্মুধানো, ছেড়ান মারস পুপকানি অদসনং মঞ্জুরাজস গচ্ছে।
৫। পুফানি হেব পচিনন্তং ব্যসত্তমনসং নরং,
সুত্তং গামং মহোঘো'ব মঞ্জু আদায় গচ্ছতি।
৬। যথাপি ভ্রমরো পুপ্ফং বণুগল্পঃ অহেঠযং, পলেতি রসমাদায এবং গামে মুনীচরে।
৭। ন পরেসং বিলোমানি ন পরেসং কতাকতং
অন্তনো'র অবেখেয্য কতানি অকতানি চ।
৮। যথাপি বুচিরং পুং বগ্নবস্তুং অগন্ধক, এবং সুভাসিতা বাচা অফলা হোতি অকুকতো।
৯। যথাপি রুচিরং পুফং বণুবন্তং সগন্ধক,
এবং সুভাসিতা বাচা সফলা হোতি সৰুতো।
১০। ন পুপগন্জো পটিবাতমেতি ন চন্দনং তগর মলিকা বা, সতঞ্চ গন্ধো পটিবাতমেডি সব্ব দিসা সুপুরিসো পৰাতি চন্দনং তগরং বা'পি উপ্পলং অথ বসুসিকী,
এতেসং গন্ধজাতানং সীলগন্ধো অনুত্তরো।
শব্দার্থ
বিজেসতি- জয় করা, পচেসতি-চয়ন করা, যেনুপম - ফেনের ন্যায়, ছেড়ান- ছেদন করে; মহোঘো প্রবল বন্যা; পচিনন্তং- চয়নকারী; অহেঠয়ং- নষ্ট না করে; পরেসং- পরের; বিলোমানি- বিচ্যুতি, কতাকতং কৃত অকৃত কাজ; অবেখেয্য - দেখা উচিত। অকুতো কার্যে পরিণত না হলে; সকুতো- কার্যে পরিণত হলে; পটিবাতমেতি - বায়ুর প্রতিকূলে যায়; সপ্নপুরিসো- সৎপুরুষ, অনুত্তরো- অনুত্তর, শ্রেষ্ঠ।ইন্দ্রিয় সুখের উপকরণকে ফুলের সাথে তুলনা করা হয়েছে। ভোগলালসায় আসক্ত মানুষ ঐ ফুলের সন্ধানে নিয়মিত ঘুরছে। দক্ষ মালাকার যেমন দক্ষতার দ্বারা অনায়াসে নিখুঁত ফুলটি বেছে নেয় তেমনি মেধাবী আপন দক্ষতার সাহায্যে প্রকৃত ধর্মপদ খুঁজে নেয়। এভাবে তিনি কামলোক, দেবলোকসহ পৃথিবী জয় করে সুগতি লাভ করেন। এ দেহ ক্ষণস্থায়ী ফেনার ন্যায় মিথ্যা মরীচিকার মত। যিনি এ সত্য জানেন তিনি মারের পুষ্পবান ছিন্ন করে মৃতকে জয় করেন। বন্যা যেমন সুপ্ত গ্রামকে ভাসিয়ে নিয়ে যায় তেমনি পুষ্পচয়নে ব্যস্ত (আসক্তি পরায়ণ) মানুষকেও মৃত্যু ছিনিয়ে নেয়। মুনিদের প্রকৃতি ভ্রমরের ন্যায়। ভ্রমর যেমন ফুলের গন্ধের বিনষ্ট না করে মধু নিয়ে চলে যায় তেমনি মুনিগণ গ্রামে বিচরণ করেন। তাঁরা মানুষকে পীড়ণ না করে ধর্মপথে নিয়ে আসে। রঙ আর রূপের আবেদন চোখে, গ্য থাকে হৃদয়ে। ফুলের সার্থকতা রূপে নয়, সৌরভে। গন্ধহীন ফুলের রূপ বৃদ্ধা। তেমনি ভালকথা ভালকাজে পরিণত হলে তবেই তার সার্থকতা। প্রেম, দয়া, সেবা, পরোপকার প্রভৃতি সৎ প্রবৃত্তিগুলো বিকশিত পুষ্পের ন্যায় মানুষের হৃদয়কে সুরভিত করে। ফুলের গন্ধ শুধুমাত্র বাতাসের অনুকূলে যায় কিন্তু সৎ ব্যক্তির যশ চারদিকে ব্যপ্ত হয়। এ বর্গে অপরের ত্রুটিবিচ্যুতি না দেখে নিজের ত্রুটি বিচ্যুতি দেখার জন্য আহবান জানানো হয়েছে। ফুলের গন্ধ ক্ষণস্থায়ী কিন্তু মুনিদের ক্ষয় নেই। এ বর্গে অনিত্যতার কথাই প্রকাশিত হয়েছে।
তহা বগগ
১। মনুজস পমত্তচারিনো তস্পৃহা বড়তি মালুবা বিষ, সো পবতি হুরাহুরং ফলমিচ্ছব বনসিং বানরো।
২। যং এসা সহতেজদী তগৃহা লোকে বিসত্তিকা, সোকা অসূস পবড়ন্তি অভিং'ব বীরণং।
৩। যো চে'ডং সহতী জন্মিং তগৃহং লোকে সুরক্ষয়ং, সোকা তম্হা পপতন্তি উদবিন্দু'র পোখরা।
৪। তং বো বদামি ভদ্দং বো যাবস্তে 'থ সমাগতা,
তগৃহায় মূলং খণথ উসীরখো'ব বীরণং মা বো নলং'ৰ সোতো'ব মারো ভঞ্জি পুনপুনং
৫। যথাপি মূলে অনুপন্দবে দলহে ছিন্নো পি রুখে পুনরেব রূহতি, এবম্পি তগৃহানুসযে অনূহতে নিস্তুতি দুখমিদং পুনপ্পুন ।
৬। সবন্তি সবধি সোতা লতা উদ্ভিজ্জ তিতি, তঞ্চ দিয়া লতং জাতং মূলং পঞঞায় ছিন্দথ।
৭। তমিশায় পুরতা পজা পরিসম্পতি সসোব বাধিতো,
সঞঞো জনসৃঙ্গত্তকা দুখমুপেত্তি পুনপ্পুনং চিরায।
৮। বীতভগৃহো অন্যদানো নিরুত্তি পদকোবিদো,
অস্থরানং সন্নিপাতং জঞা পুব্বাপরানি চ
সবে অন্তিমসরীরো মহাপঞঞা মহাপুরিসোতি বুচ্চতি।
৯। সব্বাভিভূ সধ্ববিদূহমস্মি সব্বেসু ধম্মেসু অনুপলিত্তো, সঞ্জহো তগৃহদ্বযে বিমুক্তো সয়ং অভিজ্ঞঞায় কমুন্দিসেয্যং।
১০।সদানং ধম্মদানং জিনাতি, সাং রসং ধম্মরসো জিনাতি,
সবং রতিং ধম্মরর্তী জিনাতি, তগৃহস্থযো সব্বদুক্খং জিনাতি।
শব্দার্থ
তহা – তৃষ্ণা, মালুব - মালুৰ লতা, চতি- বাড়ে, পাতি পাতি হয়; হুরাহুরং - বারবার, অভিবং বীরণ বর্ধমান বীরণ লতা; পবড়ন্তি বাড়ে, উদকবিন্দু জলবিন্দু, পোখরা পদ্মপত্র; অনুপদহ- অখণ্ড; জঞঞা জানা; সঞ্জযো- সর্বজয়ী, কমুদ্দিসেযাংকার উদ্দেশ্যে।
সারমর্ম
মানুষের তৃষ্ণার শেষ নেই। তৃষ্ণা ক্রমাগত বেড়েই চলে। যিনি তৃষ্ণাকে জয় করতে পারেন তার শোক দূরীভূত হয়। সুতরাং আসক্তি বা তৃষ্ণার মূল উচ্ছেদ কর। যেরূপ মূল অখণ্ড ও দৃঢ় থাকলে ছিন্ন গাছও আবার গজিয়ে উঠে তেমনি তৃষ্ণার মূল ছিন্ন না হলে তা বারবার দুঃখ দেয়। মানুষের কাছে ভোগ এবং সুখ খুবই আনন্দের। জালবদ্ধ শশকের ন্যায় তৃষ্ণাচালিত হয়ে মানুষ ইতস্তত ঘুরে বেড়ায়। অতএব, তৃষ্ণাকে নিবারণ করতে হবে। যিনি বীততৃষ্ণ, অনাসক্ত ও বীতরাগ তাঁর এ শেষজন্ম। সর্বত্যাগী, সর্বজয়ী ব্যক্তি তৃষ্ণাক্ষয়ের দ্বারা মুক্তপুরুষ হয়। সর্বদানের চেয়ে ধর্মদান, সর্বরসের চেয়ে ধর্মরস শ্রেষ্ঠ। ধর্মপানের তুলনা হয় না। তৃষ্ণাক্ষয়ের দ্বারা সর্বদুঃখকে জয় করা যায়।
টাকা
তৃষ্ণা: যা পালিতে তস্পৃহা বাংলায় তা তৃষ্ণা। এ শব্দের অর্থ হল আসক্তি। তৃষ্ণাকে দুঃখের কারণ বলা হয়। তৃষ্ণা মানুষের পরম শত্রু। তৃষ্ণার কারণে মানুষ বার বার জন্মগ্রহণ করে দুঃখ ভোগ করে। সাধারণত যে সমস্ত জিনিষ সুখকর ও আনন্দদায়ক তার প্রতি মানুষের আসক্তি বা তৃষ্ণার সৃষ্টি হয়। তৃষ্ণাক্ষয়েই দুঃখের অবসান হয়। তৃষ্ণা তিন প্রকার; যথা- কামতৃষ্ণা, ভবতৃষ্ণা ও বিভবতৃষ্ণা।
বুদ্ধ বগ
১। যন্স জিতং নাবজীযতি জিতমস নো যাতি কোচি লোকে,
তং বুদ্ধমনস্তগোচরং অপদং কেন পদেন নেস ?
২। যস জাগিনী বিসত্তিকা তন্হা নথি কুহিঞ্চি নেতবে,
তং বুদ্ধ মনস্তগোচরং অপদং কেন পদেন নেস ?
৩। যে ঝানপসুতা ধীরা নেখমুপসমে রতা,
দেবাপি তেসং পিহয়স্তি সম্বুদ্ধানং সতীমতং ।
৪। কিছো মনুসপটিলাভো কিচ্চং মজ্ঞান জীবিত
কিচ্ছং সন্ধমসবনং কিছো বুদ্ধানং উপপাদো।
৫। সম্পাপস অকরণং, কুসणসূস উপসম্পদা, সচিত্ত পরিযোদপনং, এবং বুদধানুসাসনং ।
৬। খস্তি পরমং তপো তিতিক্ষা নিব্বানং পরমং বদস্তি বুদ্ধা ন হি পৰ্ব্বজিতো পরূপঘাতী সমণো হোতি পরং বিহেঠযজ্ঞো।
৭। অনুপবাসো অনুপঘাতো পাতিযোদ্ধে চ সংবরো
মতঞক্তৃতা চ ভক্তস্মিং পঞ্চ সানাসনং,
অধিচিত্তে চ আযাগো এবং বুদ্ধানুসাসনং
, ৮। দুলতো পুরিসা ঞো ন সো সখ জাতি,
যথ সা জাতি ধীরো তং কুলং সুখমেধতি।
৯। সুখো বুদ্ধানং উপপাদো সুখা সন্ধম্মদেসনা,
সুখা সঙ্ঘস্স সামগুলি সমগ্গানং তপো সুখো।
১০। পূজারহে পুজযতো বুদ্ধে যদি বা সাবকে, পপঞ্চ সমতিস্তে ভিন্ন সোকপরিন্দবে ।
শব্দার্থ
জালিনী- জ্বালরূপী, বিসতিকা - বিষময়; ঝানুপসুতা ধ্যান পরায়ণ, সতিমতং- স্মৃতিমান, মঞ্চ- - মৃত্যু: - উপাদো উৎপত্তি, সচিত্তপরিযোদপনং স্বীয় চিত্তের পবিত্রতা সাধন; পরূপঘাতী পরঘাতী, অনুপবাদো অনিন্দিত, অনুপঘাতো আঘাত না করা; সংবরো সংযম, মত্তকৃতা- মাত্রাজ্ঞান; পপঞ্চ সমতিকত্তে - সকল প্রপঞ্চ অতিক্রমকারী।
সারমর্ম
যাঁর কামনা বাসনা নিঃশেষ হয়েছে, যিনি নিষ্কলঙ্ক, যিনি তৃষ্ণামুক্ত, যিনি সকল পাপ থেকে মুক্ত তিনিই বুদ্ধ। তার কাছে সমস্ত প্রলোভনই নিষ্ফল। মনুষ্যজ্য দুর্লভ, সন্ধর্ম শ্রবণ দুর্লভ, তেমনি বুদ্ধগণের উৎপত্তি বা আবির্ভাব দুর্লভ। সকল প্রকার পাপ কাজ থেকে বিরতি, কুশলকর্ম সম্পাদন এবং স্বীয় চিত্তকে শুদ্ধ রাখা- এটাই বুদ্ধগণের উপদেশ। কাউকেও আঘাত করবে না, কারও নিন্দা করবে না, মিতাহারী হবে, সর্বদা মনকে পবিত্র রাখবে। বুদ্ধগণের উৎপত্তি দুর্লভ। তাঁরা যে কুলে জন্ম নেয় সে কুলের সৌভাগ্য হয়। অতএব, অশেষ গুণসম্পন্ন বুদ্ধকে পূজা করে পূণ্যের ভাগী হও।
মগ বগ
১। মগ্গানঠাঙ্গিকো সেঠো সজ্ঞানং চতুরো পদা, বিরাগো সেইঠো ধম্মানং দ্বিপদানঞ্চ চক্ষুমা।
২। এসো'ৰ মগ্গো নযজ্ঞো দসনস্ বিসুম্বিয়া,
এতং হি তুমহে পটিপজ্জন্য মার সেতং পমোহ।
৩। এতং হি তুমহে পটিপন্না দুখ সন্তং করি সথ,
অত্থাতো বে মযা মগ্গো অঞঞায় সলস।
৪। সর্ব্বে সুখারা অনিচ্ছা"তি যদা পঞঞায় পসতি,
অর্থ নিবিস্পতি দুখে এস মগ্গো বিসুপ্রিয়া।
৫। সর্ব্বে সূতারা দুদ্ধাতি যদা পঞঞায় পসপ্তি, অর্থ নিৰূবিন্দতি দুখে এস মাগো বিসুপ্রিয়া।
৬। সৰ্ব্বে ধম্মা অনত্তা'তি যদা পঞঞা পতি অর্থ নিবিষ্পতি দুখে এস মগ্গা বিসুদ্ধিয়া।
৭। উঠানকালমূহি অনুঠহানো যুবা বলি আলসিযং উপেতা, সংসনসংক পূপমনো কুসীতো পঞায় মগ্গং অলসো ন বিন্নতি।
৮। বাচনুরখী মনসা সুসংবুতো কাযেন চ অকুসলহন কবিরা, এতে তবো কম্মপথে বিসোধযে আরাধযে মগ্গমিসিপ্পবেদিতং।
৯। উচ্ছিন্দ সিনেহমত্তনো কুমুদং সারদিকং'ব পাণিনা,
সস্তিমগ্গমের বুহ্য নিব্বানং সুগতেন দেসিতং।
১০। তং পুস্তুপসুসম্মত্তং ব্যাসমানসহ নরং,
সুত্ত গামং মহোযো;ব মঞ্জু আদায গচ্ছতি।
শব্দার্থ
বিরাগো- বৈরাগ্য, দ্বিপদং- মানুষ, পটিপজ্জথ অবলম্বন করা, সলসানং- শৈল্য উৎপাটন, নিবৃবিন্দতি - নির্বেদ প্রাপ্ত হওয়া, পায পসতি প্রজ্ঞা দ্বারা দেখ, উঠানকালমূহি - উত্থানকালে; অনুঠহানো- উত্থান রহিতে, আলসিযং আলস্যপরায়ণ, সংসন্নসংকল্পমনো কুসীতো যার চিত্ত অবসন্ন ও মন নিবীর্য, বাচানুরখী- বাক্যরক্ষায়, তথোকপথ ভিন কর্মপথ (কায়, মন ও বাক্য), উচ্ছিন্দ উচ্ছেদ কর, বুহ্য অনুসরণ করা, ব্যাসত্তমানসং; আসক্ত চিত্ত, মঞ্জু আদায় গচ্ছতি মৃত্যু নিয়ে যায়।
সারমর্ম
মার্গ হল পথ। এ সে পথ যে পথে নির্বাণ লাভ করা যায়। বলা হয়েছে, সকল মার্গের মধ্যে আর্য অষ্টাঙ্গিক মার্গ শ্রেষ্ঠ। কেননা, এ পথে চার আর্যসত্য উপলব্ধি হয়। এ সত্যের উপলব্ধিতে দুঃখের অবসান হয়। সকলের এ পথ অনুসরণ করা প্রয়োজন। সকল সংস্কার অনিত্য, সকল ধর্ম অনাত্ম। মানুষ যখন এ সত্য উপলব্ধি করেন তখন সকল দুঃখ থেকে মুক্ত হন। এ মার্গ হল বিশুদ্ধি লাভের পথ। আলস্য প্রজ্ঞা লাভের চরম বাধা। যারা আলস্যপরায়ণ, উদ্যমহীন তারা জ্ঞান লাভ করতে পারে না। মুক্তির জন্য তিনটি কর্মপথকে বিশুদ্ধ রাখতে হবে। এ তিন প্রকার কর্মপথ হল- কায়, বাক্য ও মন। চিত্তকে আসক্ত রেখ না। শান্তির পথ অনুসরণ কর। বুদ্ধ শান্তির পথ অর্থাৎ নির্বাণ পথ দেখিয়েছেন।
টীকা
মসৃণ : মসৃণ শব্দের অর্থ হল মার্গ বা পথ। বুদ্ধ মানুষের মুক্তির জন্য যে পথ দেখিয়েছেন তা-ই মার্গ বা পথ। এ পথ মধ্যম পথ। এ মধ্যম পথের নাম আর্য অষ্টাঙ্গিক মার্গ। সম্যক দৃষ্টি, সম্যক বাক্য, সম্যক কর্ম, সম্যক জীবিকা, সম্যক প্রচেষ্টা, সম্যক সংকল্প, সম্যক স্মৃতি ও সম্যক সমাধি হল এ মার্গের অঙ্গসমূহ। এটা বৃদ্ধের সর্বশ্রেষ্ঠ আবিষ্কার। বুদ্ধ বলেছেন- আমি পথ প্রদর্শক মাত্র, তোমাদেরই নির্দেশিত পথ অনুসরণ করে দুঃখ থেকে মুক্তিলাভ করতে হবে।চার আর্যসত্য
১। দুঃখ আছে
২। দুঃখের কারণ আছে
৩। দুঃখের নিরোধ আছে
৪। দুঃখ নিরোধের উপায়ও আছে।
ভিক্ বগ
১। চক্খুনা সংবরো সাধু, সাধু সোতেন সংবরো,
ঘাগেন সংবরো সাধু, সাধু, জিহায় সংবরো।
২। কাযেন সংবরো সাধু, সাধু বাচায় সংবরো, মনসা সংবরো সাধু, সাধু সথ সংবরো;
সবন্ধ সংবুতো ভিক্ষু, সদুদ্ধা পমুক্ষতি।
৩। হথসএএতো পাদসঞঞতো বাচার সঞকতো সঞতুত্তমো, অ্যঋত্তরতো সমাহিতো একো সপ্তসিতো তমাহু ভিং।
৪। যো মুখসতো ভিক্ষু মন্তভাগী অনুস্থতো, অথং ধম্মং চ দীপেতি মধুরং তনূস ভাসিতং।
৫। ধম্মারামো ধম্মবতো ধম্মং অনুবিচিন্তিযং, ধম্মং অনুসরং ভি সন্ধম্মা ন পরিহাযতি।
৬। সুজ্ঞাগারং পরিটাস সন্তচিত্ত ভিখুনো,
অমানুসী রতি হোতি সম্মা ধম্মং বিপসতো।
৭। তামাদি ভবতি ইষ পঞঞস ভিখুনো, ইন্দ্রিযগুত্তি সন্তষ্ঠী পাতিমোখে চ সংবরো।
মিত্তে ভজসূসু কল্যাণে সুস্থাজীবে অতন্দিতে।
৮। সপ্তকাযো সম্ভবাচো সম্ভবা সুসমাহিতো,
বগুলোকামিসো ভিক্খু উপসত্তো'তি বুচ্চতি।
অন্তনা চোদযজ্ঞানং পটিমাসে অস্তমগুনা,
সো অন্তগুত্তো সতিমা সুখং ভিক্খু বিহাহিসি। ১০। অত্তাহি অন্তনো নাথো, অত্তাহি অন্তনো গতি, তস্মা সঞাময় জ্ঞানং অসুসং ভদ্রংব বাণিজ্যে।
সংবরো সংযত; সাধু হিতকর পদ্ধতি প্রমুক্ত হয়; অতরতো- অধ্যাত্বের সপ্তসিতো সন্তুষ্টচিত্ত; সঞঞতুত্তমো - উত্তম সংযমী; সম্ভভাণী মন্ত্রভাষী; সুজ্ঞাগারং-শূন্যাগার; সন্তচিত্ত - শান্তচিত্ত; পবিস - প্রবেশকারী; অমানুসী অলৌকিক; তত্রযামাদি আদিকর্তব্য; সম্বজীবে শুদ্ধীবি; সঞঞাময় সংযত, অত্তাহি অন্তনো নাথো নিজেই নিজের প্রভু; অসং-অশ্বকে।সারমর্ম
ভিক্ষু বর্গে ভিক্ষুর আদর্শের কথা বলা হয়েছে। যিনি হস্ত, পদ ও বাক্যে সংযমী, যিনি আধ্যাত্মিক সাধনায় রত, যিনি শান্ত, সমাহিত, জ্ঞানী, যিনি ঔদ্ধত্য প্রকাশ করেন না, যিনি ধর্মানুরক্ত, ধর্ম অনুসরণ করেন, যিনি শুদ্ধজীবী, সদাজাগ্রত, যিনি নির্জনে ধ্যানশীল থাকেন, যাঁর কায় সুন্দর, মন সুন্দর, বাক্য সুন্দর, যিনি নিজেই নিজের উত্থানের জন্য সচেতন তিনিই ভিক্ষু। মানুষের পাঁচটি ইন্দ্রিয়- চক্ষু, কর্ণ, নাসিকা, জিহ্বা, ত্বক এদের সংযত করা কঠিন। ভিক্ষু এদের সংযত করেন এবং সকল দুঃখ থেকে মুক্ত হন।
১। ছিন্দ সোতং পরকৰ্ম্ম কামে পদ ব্রাহ্মণ,
সারানং খ্যং ঞড়া অকতঞঞ সি ব্রাহ্মণ,
২। যা দ্বযেসু ধম্মেসু পার হোতি ব্রাহ্মণো,
অথস সবে সংযোগ অথং গচ্ছস্তি জানতো।
৩। যস পারং অপারং বা পারাপারং ন বিজ্ঞতি, বীতন্দরং বিসংযুক্তং তমহং বুমি ব্রাহ্মণং।
৪। কামিং বিরজমাসীনং কতকিঞ্চং অনাসবং,
উত্তমখং অনুপপত্তং তমহং বুমি ব্রাহ্মণং।
৫। যস কাখেন বাচায় মনসা নথি দুৰ্ব্বত,
সংবুতং তীহি ঠানেহি তমহং বুমি ব্রাহ্মণং ।
৬। ন জটাহি ন গোল্ডেন ন জচ্চা হোতি ব্রাহ্মণো, যমূহি সচ্চক্ষ ধম্মো চ সো সূচী সো চ ব্রাহ্মণো।
৭। সসংযোজনং ছেড়া যো বে ন পরিতস্সতি, সঙ্গাতিগং বিসংযুক্তং তমহং বুমি ব্রাহ্মণ ।
৮। ছেড়া নম্বিং বরত্তদ্ধ সন্দাম সহনুকম,
উক্ খিত্ত পলিঘং বুদ্ধং তম্হং বুমি ব্রাহ্মণ।
৯। অক্কোসং বর্ষব্যঞ্চ অনুঠো যো ভিডিখতি,
খণ্ডিবলং বলানীকং তমহং তুমি ব্রাহ্মণ।
১০। অন্বোধনং বতবস্তুং সীলবস্তুং অনুসদং,
দত্তং অন্তিমসারীরং তমহং ৰুমি ব্রাহ্মনং।
শব্দার্থ
সোতং-স্রোত, ছিন্দ - ছেদন করা- পরম পরাক্রম, খয়ং - ক্ষয়, অকৃতজ্ঞজ্ঞসি - অকৃত, পার- পারতাম, বিজ্ঞতি - বিদ্যমান, বীতদরং - নির্ভীক, সংবৃতং- সংযমী, জটাহি-জটা দ্বারা, জচ্চা জন্মদ্বারা, কাযিং ধ্যানী, কতকিচ্চং-কৃতকৃত্য, অনুপপতং - অনাশ্রব, উত্থিত্ত পরিঘং-মোহ প্রাচীর, সঙ্গাতিগং - আসক্তিরহিত, বিসংযুক্তং- বন্ধনযুক্ত, অক্টোসং আক্রোশ, বভবস্তু ব্রতপরায়ণ, দস্তঃ সংযত, অস্তিমসরীরং অন্তিম দেহধারী, তিতিদ্ধতি ত্যাগ করা।ব্রাহ্মণ বর্গে কি কি গুণে ব্রাহ্মণ হওয়া যায় তাই মূলত আলোচিত হয়েছে। এ বর্গের মূল আবেদন হল কেউ জন্মের দ্বারা নয়; বরং কর্মের দ্বারাই ব্রাহ্মণ হয়। জন্ম বা গোত্র পরিচয়ে কেউ ব্রাহ্মণ হয় না, যিনি পবিত্র যার অন্তরে সত্য ও ধর্ম বিরাজমান তিনিই ব্রাহ্মণ। যিনি ধ্যানপরায়ণ, নিরাসক্ত, নিশ্চল এবং পরমার্থ লাভ করেছেন তিনিই প্রকৃত ব্রাহ্মণ। যিনি সুবাক্য বলেন, যিনি ক্ষমাশীল, ধ্যানপরায়ণ, সংযমী এবং অন্তিম দেহধারী তিনিই ব্রাহ্মণ । ব্রাহ্মণকে তৃষ্ণা স্রোত রুদ্ধ করে নির্বাণকে জানতে হবে।
Read more